ক্ষুধা নিবৃত্তি

ভারতের আর্থিক উন্নতি হলেও পুর্বাঞ্চলে এখনও ৩০ শতাংশেরও বেশি মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করেন । একটি ব্যক্তি কতটা ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার খাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করে দারিদ্র্যসীমা মাপা হয়। আশঙ্কাজনক এই ছবিটি প্রথম তুলে ধরা হয় জাতীয় নমুনা সমীক্ষা (ন্যাশনাল রুরাল স্যাম্পল সার্ভে) ২০০৫ এর রিপোর্টে। খাদ্যের নিরাপত্তাহীনতার কী হাল তা এই রিপোর্ট দেখিয়েছিল।

পূর্ব ভারতের ৭০ শতাংশ মানুষ গ্রামে বসবাস করে। এখানে বেশিরভাগ জমিতে বর্ষার সময়ে একবারই চাষ হয়। এখানকার পিছিয়ে পড়া জেলাগুলিতে মূলত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, জনজাতি গোষ্ঠী এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের বাস। এদের পারম্পরিক সংস্কৃতি এক সময়ে তাদের খাদ্য নিরাপত্তা এবং এগিয়ে থাকার হাতিয়ার ছিল। কিন্তু এই সংস্কৃতি আজ মৃতপ্রায়। ভারত সরকার বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তাকে অন্যতম প্রধান জাতীয় সমস্যা হিসেবে ঘোষণা করেছে। খাদ্য নিরাপত্তা আইনে প্রণয়নের মধ্য দিয়ে সরকার দরিদ্রদের ক্ষুধামুক্তি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যদিও পুষ্টির নিরাপত্তা যে তিমিরে ছিল সেখানেই রয়েছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, মানুষের হাতে কিছু তুলে দেওয়ার চেয়ে কাজের সুযোগ করে দিলে খাদ্য এবং পুষ্টির নিরাপত্তা অর্জন করা দ্রুত সম্ভব হয়।

ক্ষুধা, সক্ষমতা এবং উন্নয়ন

খিদের সমস্যা দূর করতে আমরা নিবিড়ভাবে মাঠে কাজ করি। একাজে আমাদের লক্ষ্য, তৃণমূল স্তর কেন্দ্রিক সুস্থায়ী প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সবার জন্য খাদ্য, পুষ্টি এবং জীবিকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার মৌলিক কৌশলকে ভিত্তি করে আমরা এ কাজে সহায়কের ভূমিকা পালন করি।

খাদ্য, পুষ্টি এবং জীবিকার নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্যোগের ছবি

 

শিক্ষার উদ্যোগ

অ্যাহেডের অনেকেই পশ্চিমবঙ্গে দুই তিন দশক ধরে শিক্ষার কাজে যুক্ত রয়েছে। আমরা দেখেছি, গ্রামীণ বিদ্যালয়গুলিতে, যেখানে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া ঘরের ছেলেময়েরাও পড়তে আসে, সেখানে সম্পূর্ণ শহর কেন্দ্রিক শিক্ষা দেওয়া হয়। এই শিক্ষা স্থানীয় সমাজ সংস্কৃতির সঙ্গে একদম বেমানান। ফলে তা স্থানীয় ছাত্রছাত্রীদের জন্য একেবারেই এবং অনুপযুক্ত। এই শিক্ষা ব্যবস্থার সবথেকে বড় সমস্যা হল, ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহারিক পরিবর্তন। তথাকথিত 'ভালো' শহর কেন্দ্রিক শিক্ষার নামে গ্রামীণ বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরম্পরা দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। উঠে আসছে ভোগবাদী অর্থনীতির শিক্ষা। যার পারদর্শিতা নিয়ে সারা বিশ্বজুড়ের বিদ্বজ্জনেরা প্রশ্ন করছেন।

শহর কেন্দ্রিক শিক্ষার প্রবক্তারা যুক্তি দেন, দেশজ জ্ঞান, মেধা, প্রজ্ঞা, মূল্যবোধ এবং কৃষি সংস্কৃতি বর্তমান 'উন্নয়ন' প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। তাই শহুরে শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে এর বদল ঘটানো দরকার। তাঁরা আরো যুক্তি দেন, এই শিক্ষার প্রসার ঘটলে, আধুনিক শিল্প সভ্যতারও প্রসার ঘটবে। ফলে গরিবদের জন্য আরো সুযোগ তৈরি হবে। আর তাদের জীবনধারণের মানও বাড়বে।

এটা যদি সত্যি হয় তবে হতাশ, দরিদ্র যুবদের ভিড় বাড়ছে কেন? কেন তারা জীবন-জীবিকার শিক্ষা এবং সহভাগী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে না? কেন তারা আরো দরিদ্র এবং প্রান্তিক হয়ে যাচ্ছে ? সঠিক শিক্ষা খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্যসহ তাদের নানা অধিকার অর্জনে সহায়ক হয়। সে সব থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছে কেন? শহুরে শিক্ষার জন্য উন্নয়নের একটা উল্টো ছবি ফুটে উঠছে আমাদের সামনে। দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ মানুষ, এমন কি যারা অষ্টম শ্রেণি অবধি বাধ্যতামূলক শিক্ষা পেয়েছে, তাদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, সূচিতা, প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রায় কোনো জ্ঞানই নেই। আমরা মনে করি, এই শিক্ষা এবং দক্ষতাগুলি খুবই প্রয়োজনীয়। এগুলি পাঠক্রমে অবশ্যই যোগ করা দরকার। একইসঙ্গে স্থানীয় এবং পারম্পরিক জ্ঞান, প্রজ্ঞার প্রসার করা দরকার। শহুরে শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য পারম্পরিক এই জ্ঞানের যে বিস্তার প্রক্রিয়া ছিল তাও ভেঙে পড়েছে। সেই প্রক্রিয়াগুলিরও সংরক্ষণ দরকার।

স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার পথ ধরে প্রাসঙ্গিক, উপযুক্ত এবং স্থানীয় সামগ্রী, ইন্ধন ইত্যাদির মাধ্যমে গ্রামীণ শিক্ষার বিস্তার।

আমরা আগেই দেখেছি, সাংস্কৃতিক দিক থেকে আলাদা হলেও কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির অভিন্ন শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে জোর করে শহুরে শিক্ষা চাপিয়ে দেওয়ার কারণে, গ্রামের মানুষের উপযুক্ত শিক্ষার বিস্তার হয়নি। সংবিধান সংশোধন করে স্থানীয় সরকারগুলি ওপর শিক্ষা বিস্তারের ভার দেওয়া হলেও, এ কাজে তারা এখনও অবধি কোনো ভুমিকাই নিতে পারেনি। ফলে শহুরে শিক্ষা ব্যবস্থা ক্রমশ চেপে বসেছে। কিন্তু শিক্ষাকে যদি স্থানীয় অবস্থা এবং চাহিদাকে মাথায় রেখে এবং স্থানীয় সম্পদ, জ্ঞান, প্রজ্ঞার ওপর নির্ভর করে গড়ে তুলতে হয়, তবে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার সক্রিয় ভূমিকা খুবই জরুরী।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ফ্রেমওয়ার্ক (ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক) ২০০৫ এবং স্কুল শিক্ষার উপর জাতীয় জ্ঞান কমিশন (ন্যাশনাল নলেজ কমিশন) ২০০৮ এর রিপোর্ট এই গরমিলের কথা বলেছিল। এছাড়া, তারা কমিউনিটি রিসোর্স কর্মী নিয়োগ এবং শিক্ষাক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার গুলির সক্রিয় ভূমিকার কথাও বলেছিল। কিন্তু এগুলি শুধু বলার জন্যই বলা হয়েছিল। তার কোনো প্রয়োগ হয়নি। গ্রামীণ স্কুল শিক্ষার জন্য স্থানীয় মানুষ, সমাজ-সংষ্কৃতি, জ্ঞানভিত্তিক কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

একথা মাথায় রেখে অ্যাহেড ইনিশিয়েটিভ গ্রামীণ শিক্ষকদের একটি মঞ্চ তৈরির কাজে সহায়তা করেছে। এর জন্য বাংলায় নবদিশা নামে একটি নিউজলেটার বা সংবাদ মুখপাত্র নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। আর www.nabodisha.in নামে একটি ওয়েব পোর্টালও তৈরি করা হয়েছে। এই নিউজলেটার এবং ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে একে অন্যের কাজ থেকে শিক্ষকরা জানতে পারছেন। এছাড়া ২৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং সেখানকার স্কুলগুলির মধ্যে আমরা সহভাগী কার্যক্রম শুরু করেছি। এইসব গ্রাম পঞ্চায়েতের স্কুলগুলির সঙ্গে স্থানীয় অবস্থা এবং চাহিদাকে মাথায় রেখে এবং স্থানীয় সম্পদ, জ্ঞান, প্রজ্ঞার ওপর নির্ভর করে শিক্ষাদানের এই কার্যক্রম চলছে। যেখানে পঞ্চায়েতগুলিও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে।


সংস্কৃতি ও উন্নয়ন

উন্নয়নকে শুধু আর্থিক নিক্তিতে মাপলে বড় ভুল হয়ে যায়। সংস্কৃতি হল উন্নয়নে অদৃশ্য কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অংশ যার মাধ্যমে বৌদ্ধিক, সংবেদনশীল, নৈতিক এবং আত্মিক অবস্থার সন্তোষজনক উন্নতি হয়। সুস্থায়ী উন্নয়নে সংস্কৃতিকে অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ তাই আমাদের লক্ষ্য স্থির করতে এবং আত্মিক পরিতৃপ্তি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।

এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই, সংস্কৃতির মাধ্যমেই আমরা আমাদের পরিচিতি তৈরি করি। পরিচিতি হল জন-সমূহ এবং মানবিকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের চিন্তা, ভাবনা, ধারণা, মনের ভাব প্রকাশ করি। সংস্কৃতি আমাদের ব্যবহারিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে এবং উপযুক্ত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করে।

বৃহত্তর সুস্থায়ী উন্নয়নে সংস্কৃতির একটা মৌলিক ভূমিকা রয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যক্তি, দল, সমূহ এবং দেশ তাদের ভবিষ্যৎ সুসংহতভাবে গড়ে তুলতে পারে। গতানুগতিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া এ কথার স্বীকৃতি দেয় না। ফলে মানব জীবনে সুস্থায়ী উন্নয়ন অধরাই থেকে যায়।

সংস্কৃতি শুধু বিনোদন বা কলাকৃতি প্রদর্শন (পারফর্মিং আর্ট) নয়। এটা হল পারম্পরিক জ্ঞান, প্রজ্ঞা, অভ্যাস এবং প্রতিনিধিত্বের আধার। সাংস্কৃতিক জীবনের এই সুক্ষ্ম বোধ, ব্যাখা, অর্থ হল আমাদের ভাষা, নাম, বিন্যাস, ব্যবস্থা, সম্পদ, প্রয়োগ, আচার, আত্মিকতা, বিশ্বদর্শন ইত্যাদির এক মিশ্রণ।

উন্নয়নের সাংস্কৃতিক ভিত্তি নিয়ে একটি বিতর্ক উত্থাপনের জন্য আমরা বাংলা এবং ইংরাজিতে সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতা এবং উন্নয়ন নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ পুনঃপ্রকাশ করেছি। এখানে অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে, যেগুলির প্রতি এযাবৎ মুলধারার উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় পর্যাপ্ত মনোযোগ দেওয়া হয়নি।

স্কুল সংযুক্তিকরণ কার্যক্রম

সংবিধানের একাদশ তফসিলের মাধ্যমে বলা হয়েছে, পঞ্চায়েতীরাজ সংস্থা বা স্থানীয় সরকারগুলি ২৯ টি বিষয় নিয়ে কাজ করবে। এর মধ্যে সাংস্কৃতিক কর্মসূচি অন্যতম। কিন্তু বেশিরভাগ স্থানীয় সরকার তাদের এই দায়িত্ব সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানে না। অ্যাহেড মূলত গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং স্থানীয় স্কুলগুলিকে নিয়ে যৌথভাবে সাংস্কৃতিক কাজকর্ম করতে চায়। এতে প্রথাগত শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের যে ফাঁক রয়েছে তা পূরণ করা সম্ভব।

আমাদের শিশুদের সম্মিলিত সৃজনশীলতার বিকাশই ঠিক করবে মানবতার ভবিষ্যৎ। আর তাই আমরা আমাদের বিবেচনাবোধ এবং উপলব্ধি থেকে শিক্ষা এবং সংস্কৃতির মেলবন্ধনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করি। এইভাবে উন্নয়নের দৃষ্টান্তের সাংস্কৃতিক ভিত্তিকে নতুন করে পরীক্ষা করার এবং উন্নয়নের পথগুলি অন্বেষণের প্রচেষ্টায় নতুন প্রজন্মের ওপর মনোনিবেশ করছি। এই প্রচেষ্টা শুধু সুস্থায়ী নয়, উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় যে উপাদানগুলি অস্পষ্ট থেকে যায়, সেগুলিও দৃশ্যমান হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। শিশুদের মনোভাব এবং জীবনধারা, শিক্ষাগত কর্মসূচীর প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা, তাদের নিজেদের একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরির তাদের অধিকারবোধের সংবর্ধন ইত্যাদি সব একই সুতোয় গাঁথা। আর তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় এবং মূল্যবোধ বিশ্বব্যাপী সুস্থায়ী উন্নয়নের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত।

'সৃজাঙ্গন'-সবার জন্য সৃজনশীল শিক্ষার মুক্তাঙ্গন

অ্যাহেড ইনিশিয়েটিভ জন-সমূহ বিশেষ করে প্রান্তিক মানুষজনের দক্ষতা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রধান হাতিয়ার হিসেবে তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং স্থানীয় দেশজ জ্ঞান ব্যবহার করে। এইভাবে মানুষজনের দক্ষতা ওবং সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ, একদিকে তাদের দারিদ্র এবং প্রান্তিকতার সঙ্গে যুঝতে সাহায্য করে। আর অন্যদিকে, আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ মানুষ সুস্থায়ী উন্নয়নের পথে অগ্রসর হয়, তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতাকে ভিত্তি করে।

এই লক্ষ্যে, সব বয়সের মানুষদের জীবনভর জানা, বোঝা, শেখার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সৃজনশীল উদ্যোগগুলি সযত্নে লালনপালন এবং তার প্রসার করা দরকার। এটা করতে পারলে স্থানীয় মানুষজন একদিকে যেমন সম্পদের অধিকারী হবে। অন্যদিকে তাদের ভালো থাকা, সুখে থাকার পথ প্রশস্ত হবে। ক্ষয়িষ্ণু পারম্পরিক কাঠামো এবং ব্যবস্থাগুলি পুনরুজ্জীবিত করতে সহজে জানা, শেখা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করা দরকার। একইসঙ্গে মানুষের শৈল্পিক অভিব্যক্তি এবং কলাকৃতি প্রদর্শনের শিক্ষা এবং প্রসারও খুবই জরুরি।

শৈল্পিক অভিব্যক্তি এবং কলাকৃতি প্রদর্শন হল, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার, যা আমাদের অভিজ্ঞতা, ধারণা, অনুভূতি, অন্তর্দৃষ্টিকে পুষ্ট করে, আমাদের পরিচিতি তৈরি করে। সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে আমাদের মানবতাবোধকে সমর্থ করে তোলে। সৃজাঙ্গন - সৃজনের আঙিনা। অ্যাহেড ইনিশিয়েটিভস গ্রামের পাশে থাকা প্রাথমিক স্কুলগুলি অঙ্গন ব্যবহার করে এরকমই সৃজনশীলতার চর্চাকেন্দ্র হিসাবে প্রসার করতে চায়। স্কুল শেষের পর এই কেন্দ্র চালু হবে। এখানে সব বয়সের মানুষজনের শেখা ও শেখানোর কাজ চলবে। কাজ চলবে কলাকৃতি প্রদর্শনেরও। বেঁচে থাকার জন্য দিনভর হাড়ভাঙা খাটুনির পর সৃজাঙ্গন তাদের কাছে মুক্ত বাতাস নিয়ে আসবে বলে আমাদের মনে হয়। সংক্ষিপ্ত, সমৃদ্ধ অথচ স্বতন্ত্র শেখা, জানা, বোঝা এবং প্রদর্শনের এই সৃজাঙ্গন স্থানীয় জ্ঞান, প্রজ্ঞার, কলাকৃতির চর্চার কেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে আমদের বিশ্বাস।